‘সমাজ-রাষ্ট্রে আজও নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি’
একবিংশ শতাব্দীতে আজও দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর সমান অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নারী শাখার কমরেড জলি তালুকদার।
একবিংশ শতাব্দীতে আজও দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর সমান অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি)নারী শাখার কমরেড জলি তালুকদার।
তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রের আইন থেকে শুরু করে আচার-অনুষ্ঠান পর্যন্ত সবকিছুতেই কাঠামোগতভাবে নারী বিদ্বেষ চরিতার্থ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় লালিত নারী বিদ্বেষ ও পিতৃতান্ত্রিক পুরুষ শ্রেষ্ঠত্ববাদ সমাজ ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। নারীরা প্রতি পদক্ষেপে বর্তমান সমাজের এই সাংস্কৃতিক পশ্চাৎপদতার নিষ্ঠুর শিকারে পরিণত হচ্ছে। তিনি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
জলি তালুকদার আরো বলেন, রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণ করা সম্ভব না হলে নারীসহ শোষিত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। তিনি তরুণ ও শ্রমজীবী নারীদের নেতৃত্বে বিপ্লবী ধারায় নারী মুক্তি আন্দোলন জোরদার করার আহ্বান জানান।
আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টায় ঢাকার পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের সামনে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ নারী শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পার্টির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড জলি তালুকদার। সিপিবি নারী শাখার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদা কুদ্দুস রানুর সভাপতিত্বে ও সহকারী সম্পাদক রঞ্জনা দেবীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন সিপিবি নেতা তাহমিনা ইয়াসমিন তিথি, শিবানী ভট্টাচার্য্য, মমতা চক্রবর্তী প্রমুখ।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে অব্যাহতভাবে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটে চলেছে। কুমিল্লার তনু হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা হয়নি। মুনিয়া হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তকে দেশের আইন স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারেনি। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে প্রতিবাদী দেয়ালচিত্র আঁকার দায়ে উল্টো ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার এবং তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও বিচারহীনতাই একেরপর এক নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে।
সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনে পরবর্তী দুই বছরের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদা কুদ্দুস রানুকে সম্পাদক ও রঞ্জনা দেবীকে সহকারী সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়।