তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য 'গুরুতর': পররাষ্ট্র উপদেষ্টা\n
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির মনে করছেন অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে মিজ গ্যাবার্ড ওই মন্তব্য করেছেন। হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে যথাযথভাবে হয়তো অবহিত নন সে কারণে তিনি এ মন্তব্যটা করেছেন। কাজেই তাকে যদি আমরা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাটা জানাতে পারি তাহলে আমি মনে করি তিনি যেটা মনে করছেন সেটা হয়তো তার পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে।’
মিজ গ্যাবার্ড যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন বলে তার বক্তব্যকে কম গুরুত্ব দিয়ে দেখার অবকাশ নেই মন্তব্য করে মি. কবির বলেন, ‘সেজন্যই আমার ধারণা বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই একটা প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে।’
এই বিবৃতির বাইরে বাংলাদেশের আর কোন কিছু এখন আর করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন সাবেক এই রাষ্ট্রদূত। মিস গ্যাবার্ড তার সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ক্যাবিনেটের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া সদস্যদের কথাবার্তা কেবল শুরু হয়েছে।
এ বিষয়টি উল্লেখ করে মি. কবির জানান, এখন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বর্তমান বাস্তব অবস্থা তুলে ধরলে মিজ গ্যাবার্ডের অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে।
বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের উত্থানে মিজ গ্যাবার্ডের মন্তব্য দেশটির অতীতের রেকর্ডকে অনুসরণ করে না বলে জানান তিনি। গত ১০ বছরে বাংলাদেশে যেভাবে জঙ্গি কর্মকাণ্ড, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান তৈরি করেছে, তথ্যউপাত্তের সাথে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্য যে মেলে না, সেটা জোরালোভাবে তুলে ধরা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
মিজ গ্যাবার্ডের এই বক্তব্যকে একটা দেশের নীতি বলা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, "একটা বক্তব্য তো আর একটা নীতি হয় না, একটা বক্তব্য একটা অবস্থান হতে পারে। কাজেই সেই অবস্থানটা যে বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ নয়, সেটা আমাদের তুলে ধরতে হবে।"
‘সমস্যা সমাধানে সরকারকে জোর দিতে হবে’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, যেসব সমালোচনা তৈরি হয়েছে, সেগুলোর কারণ খুঁজে বাংলাদেশকেই সমাধানের কথা ভাবতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই সংখ্যালঘু ইস্যুতে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছিলো বলে উল্লেখ করেন মি. আহমেদ। সেগুলোও তুলে ধরা দরকার বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টাকে ভালো করে অ্যাড্রেস (নজর দেয়া) করা দরকার। সমালোচনাটা বাড়তে থাকলে আদৌ ঠিক কি না, এভিডেন্স কোথায় এগুলো ভালো করে দেখা দরকার। যেহেতু একটা সমালোচনা আছে এটা আমাদেরই ঠিক করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ফলে এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিতে হবে বলে মনে করছেন এই অধ্যাপক।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এটা নিয়ে একটা অ্যাটেনশন দিয়েছে, ফলে তার কী এভিডেন্স আছে সেটাও দেখা দরকার। ফলে বাংলাদেশের সরকারকেই এখন দৃশ্যত তুলে ধরতে হবে যে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তারা ভয়-ভীতির মধ্যে নেই।’