ড. ইউনূসকে কী সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো?\n
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যারা শিক্ষকতায় আছেন, তাদের পরিস্থিতিটা কেমন?
এটা তো শুধু শিক্ষকতায় না, এটা হচ্ছে যে মানসিকতটা একটা চলে এসেছে, যেটা সবাইকে একটু ভীত করছে। বিষয়টা হচ্ছে, যারা যাদের সঙ্গে একমত না এটা ধর্মভিত্তিক হতে পারে, এটা জাতিগত হতে পারে ,এটা যেকোনোভাবে একটু ভিন্ন চিন্তাধারার আছে, ভিন্ন অবস্থানের আছে, ধর্মীয় দিক থেকে একই ধর্ম পালন করছে না। আবার হতে পারে তারা জাতিগতভাবে বাঙালি জাতি না, এটা হতে পারে বাঙালি মুসলমান না। এটা হতে পারে অবস্থান বা চিন্তাটা অন্য ধরনের। কিন্তু আমাদের মূল যেটা হচ্ছে যে, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশ পেয়েছি, চার মূলনীতি, তো এটাকে ধূলিসাৎ করা, এটাকে ভুলে যাওয়া, এটাকে অবহেলা করা, কোনোক্রমেই চলবে না। এই জিনিসটাকে নিয়ে আসতে হবে, এবং অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম নিরপেক্ষতা আমাদের চার মূলনীতির বিরাট একটা স্তম্ভ এবং গণতন্ত্র আরেকটা। গণতন্ত্র মানে এখন যারা আসছে ক্ষমতায় তাদের কাছেই সবাই জবাবদিহি করবে, সেটা নয়। জনগণের কাছে স্পষ্টভাবে সবকিছু স্বচ্ছ করা- সেটা হলো মূল বিষয়।
জুলাইজুড়ে আন্দোলন গেল, আগস্টও শেষ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান কতটা স্বাভাবিক?
প্রথমেই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য ক্লাস হয়নি। তারপরে চলে আসছে রোজার মাস। তারপর গরম বেশি থাকায়ও স্কুল বন্ধ ছিল। তারপর নতুন পাঠ্যক্রম শিক্ষকরা, সেভাবে বুঝছে না। তবে নতুন পাঠ্যসূচি আমি যেটা দেখেছি, আমার কাছে ভালো লেগেছে। বাচ্চারা এবং শিক্ষকরাও এটাতে অভ্যস্ত না। সবমিলিয়ে এখন আন্দোলন হলো। পুরো বছর আসলে ক্লাসই তো হয়নি। আমার ভাগনেরা যে স্কুলে যায়, সেখানে প্রধান শিক্ষককে সরানোর জন্য আন্দোলন চলছে। স্কুল খোলা, কিন্তু ক্লাস হচ্ছে না। আমি ভাগনেদের বলেছি, তোমরা আন্দোলনে যেও না, চুপচাপ থাকো। যখন পরিস্থিতি ঠিক হবে, তখন আবার স্কুলে যেতে শুরু করো। তাই পুরো বছর বাচ্চাগুলো বঞ্চিত হয়েছে তাদের শিক্ষাবছর থেকে।
শিক্ষা উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, আগের পাঠ্যক্রমে ফিরে যাবেন- কীভাবে দেখছেন?
এখন যেটা হচ্ছে, যে ক্ষমতায় আসছে সে একটা শিক্ষাপদ্ধতি দিচ্ছে, আরেকজন আসবে, আরেকটা বের করবে। আরেকজন বলবে পুরোনোটা গ্রহণ করবে, পুরোনো বলতে কোন পুরহাডনোটা গ্রহণ করবে? ২০২২ সালেরটা গ্রহণ করবে, নাকি তারও আগেরটা গ্রহণ করবে, এটা স্পষ্ট করতে হবে। এগুলো নিয়ে তো অনেক জটিলতা ছিলো। এটা বাদ দিবে, এ নিয়ে আন্দোলন করেছে। কবি সুফিয়া কামাল, কবি গোলাম মোস্তফা, কবি শামসুর রাহমান, রবি ঠাকুরের কবিতা বাদ দিয়েছিলো কয়েক বছর আগে, তারপর আন্দোলন হয়। এমনটা তো বার বার হয়, তারপর আন্দোলন হয়, তারপর অন্তর্ভূক্তি হয়, চেঞ্জ হয়- এসব তো বাচ্চাদের ওপর সমস্যা ফেলছে। এটার সমাধানে বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাচ্চাদের জন্য কী দরকার- তাদের গড়ে তোলার জন্য, তাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য, জ্ঞান দেওয়ার জন্য, এটা খুবই প্রয়োজন। হুট করে আগের সরকার এটা করেছে বলে, এই সরকার এটা গ্রহণ করবে না- এই ধরনের নীতি কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়, বাস্তবসম্মতও নয়। কোন জিনিসটা গ্রহনযোগ্য না, কেন গ্রহণযোগ্য না, কেন পরিবর্তন করতে হবে, এর কিন্তু একটা বিশ্লেষণ, আর সঠিক একটা পন্থা থাকা দরকার। আমি সস্তাভাবে আগেরটা ঠিক, নতুনটা বাদ, নতুনটা ঠিক, আগেরটা বাদ- এই ধরনের আলোচনায় যেতে ইচ্ছুক না।