ভয়ঙ্কর রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া
ভয়ঙ্কর রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। অন্যান্য বিষধর সাপের কামড়ের চিকিৎসার চেয়ে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কঠিন ও জটিল। এর দংশনে মৃত্যুর হারও বেশি।
হাসপাতালে ব্যবহার করা অ্যান্টিভেনম (ইনজেকশন) সব ধরনের সাপে কাটা রোগীদের ব্যবহারের জন্য। এগুলো ভারত থেকে আমদানি করা হয় এবং রোগীদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়।
রাসেলস ভাইপারের বিষের প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্তের রক্তক্ষরণ হয়, হৃদপিণ্ডের সমস্যা দেখা দেয়, কিডনির কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যায়। এই সাপের কামড়ে মূলত দরিদ্র কৃষক ও অন্যান্য দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। কারণ হাসপাতালে যেতে বিলম্ব, অ্যান্টিভেনম সবসময় কাজও করে না।
বাংলাদেশে এই সাপের অস্তিত্ব ছিল অনেক আগে থেকেই। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাপটি চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া নামে পরিচিত। এটি দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো।
গত বছর ফরিদপুরের চরভদ্রাসন এলাকায় সাপুড়ে সুমন মিয়া একটি সাপ ধরেন। অজগর মনে করে নাড়াচাড়া করার সময় সাপটি তাঁর হাতে কামড় দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই সাপটি ছিল রাসেলস ভাইপার।
আইইউসিএন ২০০২ সালে এই সাপটি বাংলাদেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
২০০২ সালের পরে এই সাপ বাংলাদেশে আর দেখা যায়নি। ২০১৩ সালে হঠাৎ এই সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু হলে বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপারের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়।
২০১৩ সালের পর থেকে দেশের কমপক্ষে ২৫টি জেলায় রাসেলস ভাইপার সাপ ছড়িয়ে পড়েছে।এটি বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সাপ হলেও এখন উপকূলীয় অঞ্চল বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
চিকিৎসকদের মতে, সরকারের উচিত রাসেলস ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টিভেনম তৈরি করে জীবন বাঁচানোর উদ্যোগ নেওয়া।
রাসেলস ভাইপার সাপটি ভারতীয় উপমহাদেশের চারটি বড়ো সাপের একটি। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতে কাজ করতে এসেছিলেন স্কটিস সার্জন প্যাট্রিক রাসেল। ১৭৯৬ সালে তিনি এই সাপ সম্পর্কে গবেষণা করেন। তাঁর নাম অনুসারে এই সাপের নামকরণ করা হয়।