top ad image
top ad image
home iconarrow iconবিশ্ব রাজনীতি

সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু

সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ বাংলাদেশির মৃত্যু

সৌদি আরবের আল নাজাদ অঞ্চলের আপিপ শহরে কাজে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাংলাদেশি সময় দুপুর ১২টা ও সৌদি সময় আনুমানিক সকাল ৯টার দিকে আপিপ থেকে নির্মাণ কাজে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম বিশকাটালি গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে সবুজ চৌকিদার (৩৮), পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের সৈয়াল বাড়ির মো. ইসমাইল সৈয়ালের ছেলে মো. সাব্বির (২১) এবং আলগী উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রিফাত (২০)।

শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম।

কমলাপুর গ্রামের রিফাত মাত্র ৩ বছর আগে গিয়েছেন ওই দেশে। ভবনের নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগেও ছেলের সাথে কথা হয়েছে। বাবার আবেদন ছিল ছেলে যেন বাড়িতে এসে ঈদ করে। কিন্তু তা আর হলো না।

রিফাতের প্রতিবেশী আল-আমিন খান বলেন, রিফাত খুবই কমবয়সী। এমন দুর্ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। সান্ত্বনা দেয়ার মতো কিছুই নেই। ছেলেটি তাদের সংসারের উপার্জনের হাল ধরেছিল।

নিহত সাব্বিরের বাবা ইসমাইল সৈয়াল ও মা ফাতেমা বেগমের একটাই দাবি তাদের সন্তানকে দেশে আনার জন্য যেন সরকারিভাবে সহযোগিতা পায়। সাব্বিরের মা ফাতেমা বেগম ছেলের শোকে কথাও বলতে পারছেন না। অনেকটা বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিয়েও মাকে বুঝাতে পারছেন না। কিছু সময় পর পর ছেলের নাম নিয়ে কেঁদে উঠেন।

সাব্বিরের ছোট বোন স্নেহা বলেন, ভাই আমাকে ফোনে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন। দেশে আসলে কি কি করবেন। গত কয়েকদিন আগে কথা হলে আমি দেশে আসার জন্য বলি। কিন্তু ভাইয়ের আর আসা হলো না। দুই ভাইয়ের আমি ছোট। বড় ভাইও সৌদিতে থাকেন।

সাব্বির আর রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়েছেন সবুজ চৌকিদার। তিনি তাদের নিয়ে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ করতেন। নিজেদের গাড়িতে তারা কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়ির চালক ছিলেন সবুজ। দুর্ঘটনায়র সময়ও গাড়ির চালক ছিলেন সবুজ জানালেন তার পিতা জামাল চৌকিদার।

জামাল চৌকিদার বলেন, তার ছেলে সবুজ প্রায় ১৮ বছর সৌদিতে থাকেন। বেশ কয়েকবার দেশে এসেছেন। তার স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান আছে। তাদেরও ভ্রমণ ভিসায় কয়েকবার সৌদিতে নিয়েছেন। সর্বশেষ গত দুই সপ্তাহ পূর্বে দেশ থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সৌদিতে নিয়েছেন। তারা এখন সৌদি আছেন।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি সময় ৪ টায় সবুজসহ ৩ জনের দুর্ঘটনার খবর পান। রাত ১০টায় সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এই তিন পরিবারের দাবি সন্তানদের মরদেহ আনার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যাতে সহযোগিতা করে।

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা জানান, সৌদিতে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে আমাদের জানালে তাদের জন্য যেসব করণীয় আছে সব ধরণের সহযোগীতা করা হবে।

r1 ad
r1 ad