top ad image
top ad image
home iconarrow iconবিশ্ব রাজনীতি

শেখ হাসিনা এখনও প্রধানমন্ত্রী— এমন কথা বলেননি ট্রাম্প

শেখ হাসিনা এখনও প্রধানমন্ত্রী— এমন কথা বলেননি ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’— এ দাবি পুরোপুরি মিথ্যা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের কোনো সাক্ষাৎকারে এমন কোনো মন্তব্যই করা হয়নি, বিশেষত বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনাকে নিয়ে।

বুধবার (২০ নভেম্বর) এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনাকে নিয়ে পোস্টটি ছড়িয়েছে, তাতে দাবি করা হয় যে ট্রাম্প সম্প্রতি এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এমন কোনো মন্তব্যই তিনি করেননি। বরং, ট্রাম্প ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে কিছু বলেনই নি।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এই মিথ্যা খবরটি ছড়িয়েছে বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারের পতনের কয়েক মাস পর। একটি পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’ এমন দাবি করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সম্প্রতি এ কথা বলেছিলেন যে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ অবৈধ ছিল। এই প্রসঙ্গে কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়, পিবিডি পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘যেহেতু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি এখনও প্রধানমন্ত্রী।’

এএফপির ফ্যাক্ট চেক বলছে, এই মিথ্যা দাবির সঙ্গে একাধিক ছবি যুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে ট্রাম্পকে পিবিডি পডকাস্টের উপস্থাপক প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সঙ্গে আলোচনা করতে দেখা গেছে। ছবির ওপরে লেখা ছিল- আমি মনে করি হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ট্রাম্প। ফেসবুকে এই ধরনের অনেক পোস্ট ছড়িয়ে পড়েছিল, যা ট্রাম্পের বক্তব্য হিসেবে দাবি করা হয়েছিল।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দাবির কোনো ভিত্তি নেই। ট্রাম্প কখনো এমন কোনো মন্তব্য করেননি, বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে নিয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই। ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ ট্রাম্প একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন যা পিবিডি পডকাস্ট নামক ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সাক্ষাৎকারের ভিডিওটির শিরোনাম ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্প গেটস ইমোশোনাল-স্পিকস অন ট্যারিফস, ওবামা অ্যান্ড ইরান। ভিডিওটি এক ঘণ্টা ২৬ মিনিটের ছিল এবং সেখানে বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনাকে নিয়ে ট্রাম্পের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এবিসি নিউজও এই বিষয়ে কোনো প্রমাণ পায়নি যে, ট্রাম্প বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনা সম্পর্কে কিছু বলেছেন।

এদিকে যদিও ট্রাম্প ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে ৩১ অক্টোবর, ২০২৩-এ, তিনি নিজের ভেরিফায়েড এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশ নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে দলবদ্ধভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। দেশটি এখন পুরোপুরি বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। তবে, এই পোস্টে তিনি শেখ হাসিনা বা তার সরকার সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।

এটি পরিষ্কার যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ট্রাম্পের বক্তব্যের মতো মিথ্যা দাবিগুলো প্রকৃত ঘটনা থেকে অনেক দূরে। বার্তা সংস্থা এএফপি এবং অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলোর অনুসন্ধানে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ট্রাম্প শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা বর্তমান সরকার নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এই মিথ্যা খবরটি ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই। যখন গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান এবং তার পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনার জন্ম নেয়, তখনই এমন মিথ্যা দাবির সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে কিছু বিক্ষোভকারী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ দাবি করছিলেন, কারণ তারা মনে করছিলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ অবৈধ হতে পারে। এসময়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব মিথ্যা দাবির উত্থান ঘটে। সূত্র: এএফপি।

r1 ad
r1 ad