top ad image
top ad image
home iconarrow iconফিচার

সাহিত্য

রবীন্দ্রনাথের দাদন ব্যবসা

রবীন্দ্রনাথের দাদন ব্যবসা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কবিরা সূদ খান? নাকি সূদের কারবার তাঁদের মানায়? কিন্তু খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই কুষ্টিয়ার শিলাইদহে শুরু করেছিলেন দাদন ব্যবসায়ের কারবার। উদ্দেশ্য ছিল গরীব চাষিদের আর্থিক সহয়তা। আর সূদ বসিয়েছিলেন, যাতে চাষিরা সচেতন থাকে। অন্তত টাকাটা আসল কাজে ব্যয় না করে বাজে খরচ করে ফেলে। কিন্তু কবি বলে কথা। ফল যা হওয়ার তাই হয়েছিল। সূদ দূরে থাক, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসল টাকাই ফেরত আসেনি।

আদতে প্রজাদের অক্ষমতার ব্যাপারটি তিনি ভালোভাবেই অনুধাবন করতেন। রথীন্দ্রনাথের মতে, জোর-জুলুম দূরে থাক, গরিব প্রজাদের কাছে ঋণের টাকা চাইতেই বিবেকের দংশনে ভুগতেন রবীন্দ্রনাথ। পরে তাঁর ব্যক্তিগত তহবিলের দেদার টাকার শ্রাদ্ধ হয়েছিল দাদন ব্যবসায়।

অন দ্য এজেস অব টাইম বইয়ে কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ আরো বলেছেন, আসলে এই ঋণদানের বিষয়টাকে রবীন্দ্রনাথ কখনোই ব্যাবসায়িক দৃষ্টিতে দেখেননি; বরং তাঁর কবিসত্তাই ব্যাকুল হয়ে উঠত এতে।

রবীন্দ্রনাথের জীবনের সবচেয়ে পাওয়া এই শিলাইদহের গরিব প্রজাদের কাছ থেকেই। আর এ কথা স্বীকারে রবীন্দ্রনাথও কার্পণ্য করেননি যে শিলাইদহের গ্রাম-প্রকৃতি, হতদরিদ্র মানুষ এবং তাদের জীবনই তাঁর কবিসত্তায় বড় প্রভাব ফেলেছিল। সে কথা যে সত্যি, তার প্রমাণ মেলে তাঁর শিলাইদহ-পূর্ব আর শিলাইদহ বাসের পরবর্তী জীবনের কবিতার পার্থক্য, ভাবগত পার্থক্য দেখলেই। সেই ঋণের প্রতিদান রবীন্দ্রনাথ দিয়েছিলেন নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরও।

নোবেল থেকে পাওয়া অর্থের প্রায় অনেকটাই তিনি খরচ করেছিলেন গরিব প্রজাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করতে। তাই ব্যবসায়ী হিসেবে, চাষি হিসেবে রবীন্দ্রনাথ যত অসফলই হোন, নিজের মানবিক সত্তার জয়ধ্বনিতে তিনি সফল বারবার।

r1 ad
r1 ad