
সজীব রহমান

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের প্রবীণ নেতার পাশাপাশি নবীনদের অনেকের হাতেও উঠেছে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনে ঘোষণা করা প্রার্থীর তালিকায় দেখা গেছে, ৮১ জনই প্রথমবারের মতো এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়বেন। এর মধ্যে অন্তত ২৪ জন রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন বাবার হাত ধরে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। মঙ্গলবার অবশ্য মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী নাম স্থগিত করা হয়েছে। বাকি আসনগুলোর কিছুতে দলীয় প্রার্থী দিলেও বাকি আসনগুলো জোটের শরিক দলগুলোর জন্য ছাড় দেওয়া হবে।
বিএনপির প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, তরুণ এসব নেতার মধ্যে কয়েকজন আগেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী ছিলেন। দুয়েকজন দায়িত্ব পালন করেছেন সংসদ সদস্য হিসেবেও। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংগঠনিক দায়িত্বেও রয়েছেন তারা।
পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার নজির হরহামেশাই দেখা যায়। তাদের অনেকেই সে পথ ধরে রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিতও করেছেন। তেমনই কিছু বিএনপি নেতার সন্তান দীর্ঘ দিন ধরেই দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত রয়েছেন। এখন বাবার মৃত্যু বা বার্ধক্যজনিত কারণে আগের মতো সক্রিয় হতে না পারার ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনে তারাই নিজ নিজ প্রতিনিধিত্ব করবেন ধানের শীষ প্রতীকের।
পঞ্চগড়-১ আসনে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকারের জায়গায় তার ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমিরকে ধানের শীষের টিকেট দিয়েছে বিএনপি। সাবেক ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি জমিরউদ্দিন সরকার এখনো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তার ছেলে নওশাদ জমির বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক।
দলের নেতারা জানাচ্ছেন, বয়সের কারণে জমিরউদ্দিন আগের মতো মাঠের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকতে পারেন না বলেই ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন নিজের নির্বাচনি আসনের দায়িত্ব।
নাটোর-১ আসনটি ছিল সাবেক যুব ও ক্রীড়া এবং সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের। এবারের নির্বাচনে তার মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুলকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পুতুল নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা দুর্নীতি দমন কমিশনবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন তিনি।
জয়পুরহাট-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মোজাহার আলী প্রধানের ছেলে মাসুদ রানা প্রধানকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। বাবার জীবদ্দশাতেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন।
কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরীকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব রউফ সুপ্রিম কোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্যানেল আইনজীবী।
সাবেক খাদ্য, তথ্য ও পরিবেশমন্ত্রী এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে যশোর-৩ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। অনিন্দ্য দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন।
ঢাকা-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিনকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামাচ্ছে বিএনপি। রবিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব। সালাউদ্দিন আহমেদ পঞ্চম ও অষ্টম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন।
অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে শপথ পড়ায়নি। দীর্ঘ আন্দোলনেও শপথ অনুষ্ঠান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসে আলোচনার জন্ম দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক।
ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ দলটির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে। দীর্ঘ দিন ধরে দলের রাজনীতিতে সক্রিয় শামা ওবায়দে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফকে ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী করেছে বিএনপি। নায়াব ইউসুফও দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তিনি।
সিলেট-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত খন্দকার আবদুল মালেকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির চৌধুরী মনোনয়ন পেয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হকও এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে সম্ভবত তাকে ফের মেয়র পদে প্রার্থী করার চিন্তা থেকে সংসদ নির্বাচনে দল বেছে নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তাদিরকে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমানকে মৌলভীবাজার-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান ২০০১ সালের উপনির্বাচনে ওই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম-৫ আসনটিতে বরাবরই বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি এখনো দলের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই আসনে এবার দল মনোনয়ন দিয়েছে তার ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে। মীর হেলাল বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-৭ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। হুম্মাম বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে বিএনপি। বাপ্পা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
গাজীপুরের দুটি আসনে ধানের শীষ প্রার্থী করেছে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের। এর মধ্যে গাজীপুর-২ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনিকে। বাবা বেঁচে থাকতেই রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন রনি। এখন তিনি গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
গাজীপুরের আরেক আসন গাজীপুর-৪-এ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজকে দলের প্রার্থী করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালেও এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে ধানের শীষের টিকিট পাওয়া মঈনুল ইসলাম খাঁন সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি। মঈনুল বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। একসময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা। তিনিও দীর্ঘ দিন ধরেই রাজনীতিতে সক্রিয়। গত ফেব্রুয়ারিতেই তাকে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ-৯ আসনে উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়ে বিএনপি। তিনি নান্দাইল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক।
শেরপুরের তিনটি আসনেই দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রার্থী করেছে বিএনপি। এই তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন ২০১৮ সালের নির্বাচনেও।
শেরপুর-১ আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালের বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন বর্তমানে ৩২ বছর বয়সি প্রিয়াঙ্কা। পেশায় চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
শেরপুর-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে। তিনিও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
শেরপুর-৩ আসনের প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেল সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল হকের ছেলে। তিনি ২০০১ সালের নবম সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য।
পিরোজপুর- ২ আসনে মনোনায়ন পেয়েছেন আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে। বর্তমানে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় সুমন বর্তমানে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি।
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে মেহেদী হাসানের নাম। তিনি ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে। কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনের এই প্রার্থী মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি।
বিএনপি নেতাদের সন্তানদের মধ্যে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা বলছেন, দল তাদের প্রতি যে আস্থা রেখেছে, কাজের মাধ্যমে তারা সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চান। মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে নিয়ে ধানের শীষ নিয়ে বিজয়ী হতে চান তরুণ এই রাজনীতিকরা।
গাজীপুর-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে আছি। আমার বাবা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক মেয়র এম এ মান্নান যেভাবে জনগণের পাশে থাকতেন, আমিও সে পথ অনুসরণ করছি। আমার বাবা গাজীপুরে যেভাবে উন্নয়ন করেছিলেন, সুযোগ পেলে আমি তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপিঘোষিত প্রার্থী মেহেদী হাসান বাবার আদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানালেন। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত শহীদুল ইসলাম মাস্টার আজীবন সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। আমাদের আসনটি সীমান্তঘেঁষা, কিছুটা হলেও অবহেলিত। চেষ্টা করব দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে এই এলাকার এবং এলাকার মানুষদের জন্য কাজ করে যাওয়ার।’
মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গাজীপুর-৩ আসনের রিয়াজুল হান্নান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। ২০১৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর ২০১৮ সালেও আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। এ সময়ের মধ্যে কাউন্সিলরদের ভোটে উপজেলা, জেলা বিএনপির দায়িত্ব পালন করেছি। রাজপথে ছিলাম। রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেছি। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করেছি। দল সেসব বিবেচনায় নিয়েই আমার ওপর আস্থা রেখেছে।’
রিয়াজুল হান্নান আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে আমি আশাবাদী, মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে এ বছর ভোট দিতে পারবে। সেই নির্বাচনের জন্য দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমার হাতে যে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছেন। এই আসন আমি তাদের উপহার দিতে চাই।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলের প্রবীণ নেতার পাশাপাশি নবীনদের অনেকের হাতেও উঠেছে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭ আসনে ঘোষণা করা প্রার্থীর তালিকায় দেখা গেছে, ৮১ জনই প্রথমবারের মতো এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়বেন। এর মধ্যে অন্তত ২৪ জন রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন বাবার হাত ধরে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। মঙ্গলবার অবশ্য মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী নাম স্থগিত করা হয়েছে। বাকি আসনগুলোর কিছুতে দলীয় প্রার্থী দিলেও বাকি আসনগুলো জোটের শরিক দলগুলোর জন্য ছাড় দেওয়া হবে।
বিএনপির প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, তরুণ এসব নেতার মধ্যে কয়েকজন আগেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী ছিলেন। দুয়েকজন দায়িত্ব পালন করেছেন সংসদ সদস্য হিসেবেও। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংগঠনিক দায়িত্বেও রয়েছেন তারা।
পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার নজির হরহামেশাই দেখা যায়। তাদের অনেকেই সে পথ ধরে রাজনীতিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিতও করেছেন। তেমনই কিছু বিএনপি নেতার সন্তান দীর্ঘ দিন ধরেই দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত রয়েছেন। এখন বাবার মৃত্যু বা বার্ধক্যজনিত কারণে আগের মতো সক্রিয় হতে না পারার ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনে তারাই নিজ নিজ প্রতিনিধিত্ব করবেন ধানের শীষ প্রতীকের।
পঞ্চগড়-১ আসনে সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকারের জায়গায় তার ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমিরকে ধানের শীষের টিকেট দিয়েছে বিএনপি। সাবেক ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি জমিরউদ্দিন সরকার এখনো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তার ছেলে নওশাদ জমির বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক।
দলের নেতারা জানাচ্ছেন, বয়সের কারণে জমিরউদ্দিন আগের মতো মাঠের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় থাকতে পারেন না বলেই ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন নিজের নির্বাচনি আসনের দায়িত্ব।
নাটোর-১ আসনটি ছিল সাবেক যুব ও ক্রীড়া এবং সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ফজলুর রহমান পটলের। এবারের নির্বাচনে তার মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুলকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পুতুল নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা দুর্নীতি দমন কমিশনবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন তিনি।
জয়পুরহাট-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মোজাহার আলী প্রধানের ছেলে মাসুদ রানা প্রধানকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। বাবার জীবদ্দশাতেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। বর্তমানে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন।
কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে রাগীব রউফ চৌধুরীকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাগীব রউফ সুপ্রিম কোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্যানেল আইনজীবী।
সাবেক খাদ্য, তথ্য ও পরিবেশমন্ত্রী এবং দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে যশোর-৩ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। অনিন্দ্য দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন।
ঢাকা-৪ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানভীর আহমেদ রবিনকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামাচ্ছে বিএনপি। রবিন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব। সালাউদ্দিন আহমেদ পঞ্চম ও অষ্টম জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন।
অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনকে ঢাকা-৬ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে শপথ পড়ায়নি। দীর্ঘ আন্দোলনেও শপথ অনুষ্ঠান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিজেই শপথ নিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসে আলোচনার জন্ম দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক।
ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ দলটির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের মেয়ে। দীর্ঘ দিন ধরে দলের রাজনীতিতে সক্রিয় শামা ওবায়দে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে চৌধুরী নায়াব ইউসুফকে ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী করেছে বিএনপি। নায়াব ইউসুফও দীর্ঘ দিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তিনি।
সিলেট-১ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত খন্দকার আবদুল মালেকের ছেলে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির চৌধুরী মনোনয়ন পেয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হকও এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে সম্ভবত তাকে ফের মেয়র পদে প্রার্থী করার চিন্তা থেকে সংসদ নির্বাচনে দল বেছে নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তাদিরকে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমানকে মৌলভীবাজার-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি নাসের রহমান ২০০১ সালের উপনির্বাচনে ওই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
চট্টগ্রাম-৫ আসনটিতে বরাবরই বিএনপির প্রার্থী ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি এখনো দলের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার এই আসনে এবার দল মনোনয়ন দিয়েছে তার ছেলে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে। মীর হেলাল বর্তমানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-৭ আসনে প্রার্থী করেছে বিএনপি। হুম্মাম বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পাকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে বিএনপি। বাপ্পা চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
গাজীপুরের দুটি আসনে ধানের শীষ প্রার্থী করেছে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের। এর মধ্যে গাজীপুর-২ আসনে প্রার্থী করা হয়েছে গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে এম মঞ্জুরুল করিম রনিকে। বাবা বেঁচে থাকতেই রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন রনি। এখন তিনি গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
গাজীপুরের আরেক আসন গাজীপুর-৪-এ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজকে দলের প্রার্থী করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালেও এ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে ধানের শীষের টিকিট পাওয়া মঈনুল ইসলাম খাঁন সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খানের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি। মঈনুল বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। একসময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা। তিনিও দীর্ঘ দিন ধরেই রাজনীতিতে সক্রিয়। গত ফেব্রুয়ারিতেই তাকে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ-৯ আসনে উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আনওয়ারুল হোসেন খান চৌধুরীর ছেলে ইয়াসের খান চৌধুরীকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়ে বিএনপি। তিনি নান্দাইল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক।
শেরপুরের তিনটি আসনেই দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রার্থী করেছে বিএনপি। এই তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন ২০১৮ সালের নির্বাচনেও।
শেরপুর-১ আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কাকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। ২০১৮ সালের বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন বর্তমানে ৩২ বছর বয়সি প্রিয়াঙ্কা। পেশায় চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক।
শেরপুর-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম চৌধুরী সাবেক হুইপ প্রয়াত জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে। তিনিও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।
শেরপুর-৩ আসনের প্রার্থী মাহমুদুল হক রুবেল সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল হকের ছেলে। তিনি ২০০১ সালের নবম সংসদের সংসদ সদস্য ছিলেন বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য।
পিরোজপুর- ২ আসনে মনোনায়ন পেয়েছেন আহমেদ সোহেল মঞ্জু সুমন। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের ছেলে। বর্তমানে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় সুমন বর্তমানে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি।
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে মেহেদী হাসানের নাম। তিনি ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত শহিদুল ইসলাম মাস্টারের ছেলে। কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনের এই প্রার্থী মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি।
বিএনপি নেতাদের সন্তানদের মধ্যে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা বলছেন, দল তাদের প্রতি যে আস্থা রেখেছে, কাজের মাধ্যমে তারা সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চান। মতপার্থক্য ভুলে সবাইকে নিয়ে ধানের শীষ নিয়ে বিজয়ী হতে চান তরুণ এই রাজনীতিকরা।
গাজীপুর-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী গাজীপুরের সাবেক মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে আছি। আমার বাবা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক মেয়র এম এ মান্নান যেভাবে জনগণের পাশে থাকতেন, আমিও সে পথ অনুসরণ করছি। আমার বাবা গাজীপুরে যেভাবে উন্নয়ন করেছিলেন, সুযোগ পেলে আমি তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
ঝিনাইদহ-৩ আসনে বিএনপিঘোষিত প্রার্থী মেহেদী হাসান বাবার আদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় জানালেন। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা প্রয়াত শহীদুল ইসলাম মাস্টার আজীবন সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। আমাদের আসনটি সীমান্তঘেঁষা, কিছুটা হলেও অবহেলিত। চেষ্টা করব দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে এই এলাকার এবং এলাকার মানুষদের জন্য কাজ করে যাওয়ার।’
মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় গাজীপুর-৩ আসনের রিয়াজুল হান্নান রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবারে আমার বেড়ে ওঠা। ২০১৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর ২০১৮ সালেও আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। এ সময়ের মধ্যে কাউন্সিলরদের ভোটে উপজেলা, জেলা বিএনপির দায়িত্ব পালন করেছি। রাজপথে ছিলাম। রাজপথ থেকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেছি। জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করেছি। দল সেসব বিবেচনায় নিয়েই আমার ওপর আস্থা রেখেছে।’
রিয়াজুল হান্নান আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে আমি আশাবাদী, মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে এ বছর ভোট দিতে পারবে। সেই নির্বাচনের জন্য দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমার হাতে যে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছেন। এই আসন আমি তাদের উপহার দিতে চাই।’

ঝুমা তালুকদার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। তিনি এ আসনের তিনবারের সাবেক এমপি প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তালুকদারের মেয়ে।
৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ৩০০টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এনসিপি। তবে, দলীয় সিদ্ধান্তে শ্রদ্ধা ও সংহতির নিদর্শন হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসনগুলোতে কোনো প্রার্থী দেওয়া হবে না।
৯ ঘণ্টা আগে
শেখ হাসিনাকে মুখ খুলতে দেওযার প্রশ্নে ভারতের পাল্টা বক্তব্য হল, একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ও সুরক্ষার প্রয়োজনে তাকে এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে ঠিকই – কিন্তু তিনি কোনও 'রাজনৈতিক বন্দী' নন।
১১ ঘণ্টা আগে