ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
তিনি ছিলেন পোপ, ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু। কিন্তু নিজেকে কেবল নিজ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি তিনি। ধর্ম সংস্কার করেছেন, সব ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির বার্তা প্রচার করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে, মানবিকতা দেখিয়েছেন যুদ্ধ বা জাতিগত সংঘাতের জেরে সৃষ্ট শরণার্থীদের প্রতি। এমনকি লিঙ্গ রূপান্তরকামীদের জন্য তিনি খুলে দিয়েছিলেন চার্চের দ্বার।
পোপ ফ্রান্সিস তাই ছিলেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পোপ। ৮৮ বছর বয়সে যখন তিনি প্রয়াত হলেন, তাকে বিদায় জানাতেও তাই নেমেছিল মানুষের ঢল। সেই মানুষের দলে ছিল সব ধর্ম, সব বয়সী মানুষ।
ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার’স স্কয়ার থেকে শুরু করে রোমের সেন্ট সান্তা মারিয়া মেজোরে ব্যাসিলিকা পর্যন্ত সড়কে অন্তত চার লাখ মানুষ শেষ বিদায় জানান পোপ ফ্রান্সিসকে। সেখানে একদিকে যেমন ছিলেন রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা; অন্যদিকে ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের সাধারণ মানুষ, যাদের মধ্যে ছিলেন শরণার্থীরাও। সবার অশ্রু আর অন্তরের অন্তঃস্তল থেকে উৎসরিত প্রার্থনা সঙ্গী করে সান্তা মারিয়ায় সমাধিস্থ হয়েছেন তিনি।
সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে গত সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ ফ্রান্সিস। ৮৮ বছর বয়সী এই পোপ ২০১৩ সাল থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে শুরু হয় পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন। শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মীয় রীতি মেনে ব্যাপক নিরাপত্তা ও বিশাল আয়োজনে শেষ বিদায় জানানো হয় পোপ ফ্রান্সিসকে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর এত সুবিশাল আয়োজন আর কখনো দেখা যায়নি।
সোমবার পোপের প্রয়াণের পর বুধবার সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় কফিনে রাখা হয়েছিল তার মরদেহ। সেখান থেকে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তার কফিনটি সেন্ট পিটার’স স্কয়ারের উন্মুক্ত স্থানে নিয়ে আসেন সাদা দস্তানা পরা ১৪ জন বাহক। প্রায় আড়াই লাখ মানুষের উপস্থিতিতেও শান্ত সেন্ট পিটার’স স্কয়ার যেন তখন করতালিতে প্রাণ ফিরে পায়।
সেন্ট পিটারস’র স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে উপস্থিত ছিল আড়াই লাখ মানুষ। ছবি: এপি
এরপরই পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন ইতালির কার্ডিনাল জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে। শুরুতেই তিনি পোপ ফ্রান্সিসের অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতি, শান্তির জন্য তার আবেদন, যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা এবং জলবায়ু সংকটের গুরুত্বের কথা স্মরণ করেন। তখনো পোপ ফ্রান্সিসকে স্মরণ করে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে গোটা প্রাঙ্গণ।
জনতার সারি তখন ছড়িয়ে পড়েছে ভ্যাটিকান থেকে ইতালির রাজধানী রোমের সংযোগ সড়ক ভিয়া দেল্লা কনচিলিয়াজিওন জুড়ে। নীল আকাশের নিচে মানুষ প্রতীক্ষায় কখন পোপের মরদেহবাহী কফিনটি একনজর দেখতে পারবেন।
পোপের অন্তিমযাত্রায় অংশ নিতে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের শহর তারান্তো থেকে এসেছিলেন রোজা সিরিয়েলি ও তার বন্ধু পিনা সানারিকো। ভোর ৫টায় রওয়ানা দিয়েছিলেন তারা।
পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন তার অবর্তমানে ভ্যাটিকানের দায়িত্বে থাকা কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল। ছবি: এপি
রোজা বলেন, পোপ ফ্রান্সিস আমাদের আশা দিয়েছিলেন। তার প্রয়াণে বড় একটা শূন্যতা তৈরি হলো। পৃথিবীর জন্য এক কদর্যময় সময়ে তিনি আমাদের ছেড়ে গেলেন। একমাত্র তিনিই ছিলেন, যিনি খুব জোর দিয়ে শান্তির কথা বলতেন।
দেড় শতাধিক দেশের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। অভিবাসন ইস্যুতে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে বরাবরেই বিরোধ ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সেই ট্রাম্পও স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পোপের শেষকৃত্যে। ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও।
পোপকে শেষ বিদায় দিতে ভ্যাটিকানে হাজির হয়েছিলেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিজিয়া, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম। আরও ছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের মিলেই, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ভ্যাটিকান থেকে রোমের পথে সড়কে লাখো মানুষের ঢল। ছবি: এপি
সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে ৯০ মিনিটের পোপের জন্য প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ২২০ জন কার্ডিনাল, ৭৫০ জন বিশপ ও চার হাজারের বেশি ধর্মযাজক। পোপের শেষকৃত্যের খবর সংগ্রহ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দুই হাজারেরও বেশি সাংবাদিক।
কার্ডিনাল বাত্তিস্তা রে বলেন, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর গত কয়েকদিনে তার প্রতি মানুষের যে তীব্র ভালোবাসার বহির্প্রকাশ আমরা দেখেছি তা থেকে এটিই স্পষ্ট হয় যে পোপ হিসেবে তিনি সাধারণ মানুষের মন ও হৃদয় কতটা ছুঁয়ে গেছেন। মৃত্যুর ঠিক আগে ইস্টার সানডেতে পোপ যেভাবে সবাইকে আশীর্বাদ করেছিলেন এবং সবাইকে অভিবাদন জানিয়েছিলেন, সেই স্মৃতিও স্মরণ করেন তিনি।
সবাইকে স্বাগত জানানো ও সবার কথা শোনাকে পোপ ফ্রান্সিসের ‘ক্যারিশমাটিক বৈশিষ্ট্য’ হিসেবে অভিহিত করেন ডি বাতিস্তা। বলেন, তার মূলমন্ত্রই ছিল গির্জাকে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা।
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সব সাধারণ মানুষ। ছবি: এপি
সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে প্রার্থনাসভা শেষে যখন পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নিয়ে শোভযাত্রা রোমের সান্তা মারিয়ার পথে রওয়ানা দেয়, তখন জনতার মধ্যে ধ্বনি ওঠে ‘পাপা ফ্রান্সেস্কো’ ধ্বনি ওঠে। সে ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে ভ্যাটিকান থেকে রোম পর্যন্ত, টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি সম্প্রচারের বদৌলতে সারা বিশ্বেও।
সেন্ট পিটার’স স্কয়ার কে পোপের মরদেহটি বিশেষ গাড়িতে করে শোভযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় রোমের সান্তা মারিয়া গির্জায়। পোপদের ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স গির্জায় সমাহিত করার রীতি থাকলেও পোপ ফ্রান্সিস তার চিরনিদ্রার জন্য রোমের প্রিয় এই গির্জাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
সেখানে যাওয়ার পথে রোমের টিবার নদীর সেতু পার হয় পোপের মরদেহবাহী শোভযাত্রা। এরপর ভিয়া ভিত্তোরিও এমানুয়েল সড়ক ধরে একে একে পার হয় পিয়াজ্জা ভেনেজিয়া, রোমান ফোরাম ও রোমের ঐতিহ্যবাহী কলোসিয়াম। ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স স্কয়ার থেকে রোমের সান্তা মারিয়া ব্যাসিলিকা পর্যন্ত এই যাত্রায় সড়কের দুপাশে উপস্থিত ছিলেন অন্তত দেড় লাখ মানুষ।
কারাবন্দি, বাস্তুচ্যুত, গৃহহীন, শরণার্থী— যাদের অধিকারের জন্য পোপ ফ্রান্সিস উচ্চকিত ছিলেন সবসময়, তারা ছুটে এসেছিলেন স্বজনকে শেষ বিদায় জানাতে। ছবি: এপি
ধীরগতিতে পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নিয়ে শোভযাত্রা যখন সান্তা মারিয়ায় হাজির হয়, সেখানে তাকে শেষ বিদায় দিতে হাজির ছিলেন আরও একদল মানুষ। তাদের মধ্যে ছিলেন কারাবন্দি, শরণার্থী, রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষ ও গৃহহীনরা; যাদের জন্য আজীবন কেঁদেছেন পোপ ফ্রান্সিস, যাদের জন্য স্বস্তির একটি পৃথিবী উপহার দিতে চেষ্টা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মাধ্যমে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে।
অসহায়-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষগুলোর কাছে থেকে শেষ বিদায় নেওয়ার পর পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নেওয়া হয় সান্তা মারিয়া গির্জার ভেতরে। সেখানে কয়েকজন স্বজনের উপস্থিতিতে একান্ত কিছু আনুষ্ঠানিকতার পর সমাহিত করা হয় পোপ ফ্রান্সিসকে। তার জন্য শেষ প্রার্থনাটি করেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর নতুন পোপ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যিনি রয়েছেন ভ্যাটিকানের দায়িত্বে।
পোপ ফ্রান্সিস নিজেকে সবসময় সাধারণ মানুষের মতোই মনে করতেন। তার শেষ বিদায়ের সবখানেই তারই ছাপ রাখার চেষ্টা করেছেন। সেন্ট পিটার’সের বদলে সান্তা মারিয়ায় সমাহিত হওয়ার সিদ্ধান্ত সেই চিন্তারই প্রতিফলন। এ ছাড়া তাকে বহনকারী কফিনটিও আগের পোপদের মরদেহের কফিনের মতো দামি কোনো কাঠ দিয়ে তৈরি হয়নি, বরং তার নির্দেশেই খুব সাধারণ কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
রোমের সান্তা মারিয়ায় নেওয়া হচ্ছে বহনকারী কফিন, যেখানে পরে সমাহিত করা হয়েছে পোপ ফ্রান্সিসকে। ছবি: এপি
এমনকি সান্তা মারিয়াতেও যেখানে তার কফিনটি সমাহিত করা হয়েছে, সেই জায়গাটিও এতদিন মোমবাতি রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হতো। শুধু তাই নয়, পোপ ফ্রান্সিসের ইচ্ছা অনুযায়ীই তার সমাধিতে থাকছে না কোনো বিশেষ শোভা। সেখানে কেবল লাতিন ভাষায় তার পোপ নাম ‘Franciscus’ খোদাই করা থাকবে। রোববার থেকে সেই সমাধি উন্মুক্ত থাকবে সাধারণ মানুষের পরিদর্শনের জন্য।
পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন প্রায় ১৩ শ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপ। আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফ্রান্সিস এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকা থেকে নির্বাচিত একমাত্র পোপ। ২০১৩ সাল থেকে ১২ বছর তিনি ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের ফ্লোরেসে শৈশব ও কৈশোর কেটেছিল জর্জ বেরগোলিওর—যিনি পরে শুধু তার দেশ নয়, পুরো লাতিন আমেরিকা থেকেই প্রথম পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস নামে। ১৭ বছর বয়সে ফ্লোরেসের সান হোসে ব্যাসিলিকায় প্রথমবারের মতো তিনি অনুভব করেছিলেন স্রষ্টার আহ্বান, যে ডাকে সাড়া দিয়ে যাজকতার পথে পা বাড়ান। বৃহস্পতিবার, স্মৃতিবিজড়িত সেই সান হোসে ব্যাসিলিকায় পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনায় মগ্ন এক নারী। ছবি: এপি
পোপ হিসেবে এই এক যুগে নানা ধরনের সংস্কারের কারণে কট্টর ডানপন্থি কার্ডিনালদেরও চরম বিরোধিতার মুখে পড়েছেন ফ্রান্সিস। কিন্তু নিজের হৃদয় থেকে উৎসরিত বাণী ছড়িয়ে দিতে কখনো পিছুপা হননি পোপ। আর সে কারণেই সারা বিশ্বের মানুষই তার প্রয়াণে শোকাহত হয়েছে, যেমনটি হয় নিজের স্বজনের প্রয়াণে।
নেপলস থেকে পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা ভার্জিনিও ও তার স্ত্রী আন্না মারিয়ার কণ্ঠেও একই বেদনা। তাদের এখন প্রত্যাশা একটিই— পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরী যিনি হবেন, তিনিও যেন একই পথ অনুসরণ করেন।
আরও পড়ুন-
[দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অবলম্বনে]
তিনি ছিলেন পোপ, ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু। কিন্তু নিজেকে কেবল নিজ ধর্মের অনুসারীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেননি তিনি। ধর্ম সংস্কার করেছেন, সব ধর্মের মানুষের জন্য শান্তির বার্তা প্রচার করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে, মানবিকতা দেখিয়েছেন যুদ্ধ বা জাতিগত সংঘাতের জেরে সৃষ্ট শরণার্থীদের প্রতি। এমনকি লিঙ্গ রূপান্তরকামীদের জন্য তিনি খুলে দিয়েছিলেন চার্চের দ্বার।
পোপ ফ্রান্সিস তাই ছিলেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের পোপ। ৮৮ বছর বয়সে যখন তিনি প্রয়াত হলেন, তাকে বিদায় জানাতেও তাই নেমেছিল মানুষের ঢল। সেই মানুষের দলে ছিল সব ধর্ম, সব বয়সী মানুষ।
ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার’স স্কয়ার থেকে শুরু করে রোমের সেন্ট সান্তা মারিয়া মেজোরে ব্যাসিলিকা পর্যন্ত সড়কে অন্তত চার লাখ মানুষ শেষ বিদায় জানান পোপ ফ্রান্সিসকে। সেখানে একদিকে যেমন ছিলেন রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা; অন্যদিকে ছিলেন বিভিন্ন ধর্মের সাধারণ মানুষ, যাদের মধ্যে ছিলেন শরণার্থীরাও। সবার অশ্রু আর অন্তরের অন্তঃস্তল থেকে উৎসরিত প্রার্থনা সঙ্গী করে সান্তা মারিয়ায় সমাধিস্থ হয়েছেন তিনি।
সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে গত সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে ভ্যাটিকানে কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পোপ ফ্রান্সিস। ৮৮ বছর বয়সী এই পোপ ২০১৩ সাল থেকে তিনি এ দায়িত্ব পালন করছিলেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে শুরু হয় পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন। শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মীয় রীতি মেনে ব্যাপক নিরাপত্তা ও বিশাল আয়োজনে শেষ বিদায় জানানো হয় পোপ ফ্রান্সিসকে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর এত সুবিশাল আয়োজন আর কখনো দেখা যায়নি।
সোমবার পোপের প্রয়াণের পর বুধবার সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় কফিনে রাখা হয়েছিল তার মরদেহ। সেখান থেকে শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় তার কফিনটি সেন্ট পিটার’স স্কয়ারের উন্মুক্ত স্থানে নিয়ে আসেন সাদা দস্তানা পরা ১৪ জন বাহক। প্রায় আড়াই লাখ মানুষের উপস্থিতিতেও শান্ত সেন্ট পিটার’স স্কয়ার যেন তখন করতালিতে প্রাণ ফিরে পায়।
সেন্ট পিটারস’র স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে উপস্থিত ছিল আড়াই লাখ মানুষ। ছবি: এপি
এরপরই পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন ইতালির কার্ডিনাল জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে। শুরুতেই তিনি পোপ ফ্রান্সিসের অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতি, শান্তির জন্য তার আবেদন, যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা এবং জলবায়ু সংকটের গুরুত্বের কথা স্মরণ করেন। তখনো পোপ ফ্রান্সিসকে স্মরণ করে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে গোটা প্রাঙ্গণ।
জনতার সারি তখন ছড়িয়ে পড়েছে ভ্যাটিকান থেকে ইতালির রাজধানী রোমের সংযোগ সড়ক ভিয়া দেল্লা কনচিলিয়াজিওন জুড়ে। নীল আকাশের নিচে মানুষ প্রতীক্ষায় কখন পোপের মরদেহবাহী কফিনটি একনজর দেখতে পারবেন।
পোপের অন্তিমযাত্রায় অংশ নিতে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলের শহর তারান্তো থেকে এসেছিলেন রোজা সিরিয়েলি ও তার বন্ধু পিনা সানারিকো। ভোর ৫টায় রওয়ানা দিয়েছিলেন তারা।
পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের আনুষ্ঠানিকতা পালন করছেন তার অবর্তমানে ভ্যাটিকানের দায়িত্বে থাকা কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল। ছবি: এপি
রোজা বলেন, পোপ ফ্রান্সিস আমাদের আশা দিয়েছিলেন। তার প্রয়াণে বড় একটা শূন্যতা তৈরি হলো। পৃথিবীর জন্য এক কদর্যময় সময়ে তিনি আমাদের ছেড়ে গেলেন। একমাত্র তিনিই ছিলেন, যিনি খুব জোর দিয়ে শান্তির কথা বলতেন।
দেড় শতাধিক দেশের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। অভিবাসন ইস্যুতে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে বরাবরেই বিরোধ ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সেই ট্রাম্পও স্ত্রী মেলানিয়াকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন পোপের শেষকৃত্যে। ছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও।
পোপকে শেষ বিদায় দিতে ভ্যাটিকানে হাজির হয়েছিলেন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিজিয়া, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স উইলিয়াম। আরও ছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হ্যাভিয়ের মিলেই, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ভ্যাটিকান থেকে রোমের পথে সড়কে লাখো মানুষের ঢল। ছবি: এপি
সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে ৯০ মিনিটের পোপের জন্য প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ২২০ জন কার্ডিনাল, ৭৫০ জন বিশপ ও চার হাজারের বেশি ধর্মযাজক। পোপের শেষকৃত্যের খবর সংগ্রহ করতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দুই হাজারেরও বেশি সাংবাদিক।
কার্ডিনাল বাত্তিস্তা রে বলেন, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর গত কয়েকদিনে তার প্রতি মানুষের যে তীব্র ভালোবাসার বহির্প্রকাশ আমরা দেখেছি তা থেকে এটিই স্পষ্ট হয় যে পোপ হিসেবে তিনি সাধারণ মানুষের মন ও হৃদয় কতটা ছুঁয়ে গেছেন। মৃত্যুর ঠিক আগে ইস্টার সানডেতে পোপ যেভাবে সবাইকে আশীর্বাদ করেছিলেন এবং সবাইকে অভিবাদন জানিয়েছিলেন, সেই স্মৃতিও স্মরণ করেন তিনি।
সবাইকে স্বাগত জানানো ও সবার কথা শোনাকে পোপ ফ্রান্সিসের ‘ক্যারিশমাটিক বৈশিষ্ট্য’ হিসেবে অভিহিত করেন ডি বাতিস্তা। বলেন, তার মূলমন্ত্রই ছিল গির্জাকে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা।
পোপ ফ্রান্সিসকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সব সাধারণ মানুষ। ছবি: এপি
সেন্ট পিটার’স স্কয়ারে প্রার্থনাসভা শেষে যখন পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নিয়ে শোভযাত্রা রোমের সান্তা মারিয়ার পথে রওয়ানা দেয়, তখন জনতার মধ্যে ধ্বনি ওঠে ‘পাপা ফ্রান্সেস্কো’ ধ্বনি ওঠে। সে ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে ভ্যাটিকান থেকে রোম পর্যন্ত, টিভি চ্যানেলগুলোর সরাসরি সম্প্রচারের বদৌলতে সারা বিশ্বেও।
সেন্ট পিটার’স স্কয়ার কে পোপের মরদেহটি বিশেষ গাড়িতে করে শোভযাত্রার মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয় রোমের সান্তা মারিয়া গির্জায়। পোপদের ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স গির্জায় সমাহিত করার রীতি থাকলেও পোপ ফ্রান্সিস তার চিরনিদ্রার জন্য রোমের প্রিয় এই গির্জাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
সেখানে যাওয়ার পথে রোমের টিবার নদীর সেতু পার হয় পোপের মরদেহবাহী শোভযাত্রা। এরপর ভিয়া ভিত্তোরিও এমানুয়েল সড়ক ধরে একে একে পার হয় পিয়াজ্জা ভেনেজিয়া, রোমান ফোরাম ও রোমের ঐতিহ্যবাহী কলোসিয়াম। ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার’স স্কয়ার থেকে রোমের সান্তা মারিয়া ব্যাসিলিকা পর্যন্ত এই যাত্রায় সড়কের দুপাশে উপস্থিত ছিলেন অন্তত দেড় লাখ মানুষ।
কারাবন্দি, বাস্তুচ্যুত, গৃহহীন, শরণার্থী— যাদের অধিকারের জন্য পোপ ফ্রান্সিস উচ্চকিত ছিলেন সবসময়, তারা ছুটে এসেছিলেন স্বজনকে শেষ বিদায় জানাতে। ছবি: এপি
ধীরগতিতে পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নিয়ে শোভযাত্রা যখন সান্তা মারিয়ায় হাজির হয়, সেখানে তাকে শেষ বিদায় দিতে হাজির ছিলেন আরও একদল মানুষ। তাদের মধ্যে ছিলেন কারাবন্দি, শরণার্থী, রূপান্তরিত লিঙ্গের মানুষ ও গৃহহীনরা; যাদের জন্য আজীবন কেঁদেছেন পোপ ফ্রান্সিস, যাদের জন্য স্বস্তির একটি পৃথিবী উপহার দিতে চেষ্টা করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মাধ্যমে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে।
অসহায়-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষগুলোর কাছে থেকে শেষ বিদায় নেওয়ার পর পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহ নেওয়া হয় সান্তা মারিয়া গির্জার ভেতরে। সেখানে কয়েকজন স্বজনের উপস্থিতিতে একান্ত কিছু আনুষ্ঠানিকতার পর সমাহিত করা হয় পোপ ফ্রান্সিসকে। তার জন্য শেষ প্রার্থনাটি করেন কার্ডিনাল কেভিন ফ্যারেল, পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর নতুন পোপ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত যিনি রয়েছেন ভ্যাটিকানের দায়িত্বে।
পোপ ফ্রান্সিস নিজেকে সবসময় সাধারণ মানুষের মতোই মনে করতেন। তার শেষ বিদায়ের সবখানেই তারই ছাপ রাখার চেষ্টা করেছেন। সেন্ট পিটার’সের বদলে সান্তা মারিয়ায় সমাহিত হওয়ার সিদ্ধান্ত সেই চিন্তারই প্রতিফলন। এ ছাড়া তাকে বহনকারী কফিনটিও আগের পোপদের মরদেহের কফিনের মতো দামি কোনো কাঠ দিয়ে তৈরি হয়নি, বরং তার নির্দেশেই খুব সাধারণ কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
রোমের সান্তা মারিয়ায় নেওয়া হচ্ছে বহনকারী কফিন, যেখানে পরে সমাহিত করা হয়েছে পোপ ফ্রান্সিসকে। ছবি: এপি
এমনকি সান্তা মারিয়াতেও যেখানে তার কফিনটি সমাহিত করা হয়েছে, সেই জায়গাটিও এতদিন মোমবাতি রাখার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হতো। শুধু তাই নয়, পোপ ফ্রান্সিসের ইচ্ছা অনুযায়ীই তার সমাধিতে থাকছে না কোনো বিশেষ শোভা। সেখানে কেবল লাতিন ভাষায় তার পোপ নাম ‘Franciscus’ খোদাই করা থাকবে। রোববার থেকে সেই সমাধি উন্মুক্ত থাকবে সাধারণ মানুষের পরিদর্শনের জন্য।
পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন প্রায় ১৩ শ বছরের মধ্যে প্রথম অ-ইউরোপীয় পোপ। আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া ফ্রান্সিস এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকা থেকে নির্বাচিত একমাত্র পোপ। ২০১৩ সাল থেকে ১২ বছর তিনি ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের ফ্লোরেসে শৈশব ও কৈশোর কেটেছিল জর্জ বেরগোলিওর—যিনি পরে শুধু তার দেশ নয়, পুরো লাতিন আমেরিকা থেকেই প্রথম পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস নামে। ১৭ বছর বয়সে ফ্লোরেসের সান হোসে ব্যাসিলিকায় প্রথমবারের মতো তিনি অনুভব করেছিলেন স্রষ্টার আহ্বান, যে ডাকে সাড়া দিয়ে যাজকতার পথে পা বাড়ান। বৃহস্পতিবার, স্মৃতিবিজড়িত সেই সান হোসে ব্যাসিলিকায় পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনায় মগ্ন এক নারী। ছবি: এপি
পোপ হিসেবে এই এক যুগে নানা ধরনের সংস্কারের কারণে কট্টর ডানপন্থি কার্ডিনালদেরও চরম বিরোধিতার মুখে পড়েছেন ফ্রান্সিস। কিন্তু নিজের হৃদয় থেকে উৎসরিত বাণী ছড়িয়ে দিতে কখনো পিছুপা হননি পোপ। আর সে কারণেই সারা বিশ্বের মানুষই তার প্রয়াণে শোকাহত হয়েছে, যেমনটি হয় নিজের স্বজনের প্রয়াণে।
নেপলস থেকে পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসা ভার্জিনিও ও তার স্ত্রী আন্না মারিয়ার কণ্ঠেও একই বেদনা। তাদের এখন প্রত্যাশা একটিই— পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরী যিনি হবেন, তিনিও যেন একই পথ অনুসরণ করেন।
আরও পড়ুন-
[দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অবলম্বনে]
বিবিসি জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসননীতি ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারির অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যদিও ‘সন্ত্রাসবাদে সহায়তা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে তা পরিষ্কার করেনি স্টেট ডিপার্টমেন্ট।
১৯ ঘণ্টা আগেগাজায় উদ্ধার প্রচেষ্টা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন অথবা রাস্তায় পড়ে আছেন তবে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ এবং সরঞ্জামের অভাবে জরুরি দল তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
১৯ ঘণ্টা আগেএ বৈঠকের দিন-তারিখ নিয়ে অবশ্য কোনো তরহ্য মেলেনি। নির্ধারণ হয়নি বৈঠকের স্থানও। তবে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস আভাস দিয়েছেন, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি হতে পারে।
২০ ঘণ্টা আগেবৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধে অনেক অগ্রগতি হচ্ছে। এ সময় জেলেনস্কি বলেন, কূটনৈতিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনায় ইউক্রেনের সমর্থন আছে।
১ দিন আগে